[......কেননা কোনোকিছুই পুরনো হয়না ..... নি:শ্বাসের পৌণ:পুনকিতা, বেঁচে থাকার জন্য ]বাংলাদেশের এখনকার ইসলামপন্থীরা বাংলা নাটক ও সাহিত্যকে প্রায়ই অভিযুক্ত করেন রাজাকার হিসেবে তাদেরকে চিত্রিত করার জন্য । অভিযোগ করেন রাজাকার দেখাতে হলেই কেনো টুপি দাড়ি ওয়ালা লোকজন দেখানো হয়? অভিযোগ করেন মুক্তিযুদ্ধের প্রসংগ এলেই কেনো ইসলামকে টেনে আনা হয় ?
প্রশ্নগুলোর জবাব মুক্তিযুদ্ধের ইতি হাসের ভেতরই আছে । যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলো ,মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন জানিয়েছিলো ,যারা শহীদ হয়েছিলো, ধষির্ত হয়েছিলো, রিফিউজি হয়ে পাশের দেশে আশ্রয় নিয়েছিলো তাদের সংখ্যাগরিষ্ ধর্মবিশ্বাসে মুসলমানই ছিলেন । একজন যোদ্ধা জয়বাংলা শ্লোগান দিয়ে ফায়ার ওপেন করে নিশ্চয় মনে মনে আল¬াহকেই ডাকতেন ।একজন মা তার যুদ্ধে যাওয়া সন্তানের মংগল কামনায় তাঁর কাছেই মোনাজাত করতেন , একজন নারী ধষির্তা হবার সময় তার নামেই চিৎকার করতেন । ব্যক্তি জীবনে মুসলমান থাকার পর ও তারাই আবার যুদ্ধ করেছেন তথাকথিত ইসলামী রাস্ট্র থেকে বেরিয়ে আসার জন্য , স্বধমী ঘাতকের হাত েথকে প্রান বঁাচাতে আশ্রয় নিয়েছেন বিধমী দেশে ।ধর্মবিশ্বাসে মুসলমান কিন্তু তারাই আবার নিরংকুশ সমর্থন জানিয়েছেন ছয়দফাকে যার ভিত্তি ছিলো বাংগালী জাতীয়তাবাদ ।শেষ পর্যন্ত এই সেকুলার বাংগালী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতেই বাংলাদেশ রাস্ট্র।
বিপরীতে এই মুক্তিসংগ্রামের বিরোধীতার ও দুটি ধারা ছিলো । একটা ছিলো আদশির্ক । ইসলাম পন্থীদের অনেকেই বাংলাদেশ রাস্ট্রের পৃথকীকরনকে সমর্থন জানাতে পারেননি তাদের ইসলামী মূল্যবোধ , পাকিস্তান সৃষ্টিতে নিজেদের অংশগ্রহনের স্মৃতি আবার অনেকে স্রেফ ভারত বিরোধীতার কারনে । এমনকি চীনাপন্থী কমিউনিস্ট রা ও মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন করেনি । সেই সময়টাতে তাদের নিজস্ব স শস্ত্র গোপন বাহিনী ও ছিলো । কিন্তু বিরোধীতা সতে¡ ও গনহত্যা বা ধর্ষনে তারা আংশগ্রহন করেনি । তাহলে হত্যা, ধর্ষন, নির্যাতনে কারা স হযোগী ছিলো?
জেনে রাখা ভালো আল বদর , আল শামস, রাজাকার এই বাহিনীগুলো তৈরী করা হয়েছিলো পাকিস্তান সেনাবাহিনীর স হ যোগী হিসেবেই এবং এরা পাকিস্তান সরকারের বেতনভোগী ছিলো । আর এসব বাহিনীতে রিক্রুট প্রধানত জামাতে ইসলামী থেকে হলে ও মুসলিম লীগ , নেজামে ইসলামের মতো অন্যান্য ইসলামী দলগুলো ও ছিলো । এসব বাহিনীর বেশীর ভাগ সদস্যই ছিলো মা˜্রাসা ছাত্র । পাকিস্তান সেনাবাহিনী যেমন ইসলামের নামে গনহত্যা চালাতো , এসব ইসলামী দল গুলো ও ইসলামের নামেই স হযোগীতা করতো । সে সময়ের দালালদের যেসব প্রামান্য ছবি আমরা দেখি তাদের বেশীর ভাগেরই চেহারা ছুরতে ইসলামীক ছাপ মারা । তাই সাহিত্যে যখন সেই সব চরিত্র উঠে আসে তখন এই সব চেহারা ছুরত ই তো দেখানো হবে ।
কি আর করা ? বাংলাদেশের ইসলামী পন্থীদের কপাল আসলেই খারাপ ।তাদের মুরব্বীরা যদি সে সময় এই পাপটা না করতো তাহলে বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলন অনেক আগেই সফল হতো । সে সময়ের ইসলামপন্থীরা আধুনিক ইসলামপন্থীদের জন্য দায় ছাড়া আর কিছুই নয় । আর আধুনিকরা সুযোগ থাকা স ত্বে ও এই দায়মুক্ত হতে পারেননি ।তারা সেই সব ঘাতক-দালালদের অস্ব ীকার করেননি , স্ব ীকার করেননি পুর্বসূরীদের পাপ বরং একই মিশন বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সেই একই কায়দায় ।
আর সেই জন্যই একই অস্বস্তি, একই অপরাধ , একই দায়ভার ।
[ইসলামপন্থী বলতে আমি ব্যক্তি জীবনে যারা ইসলাম চর্চা করেন তাদের কে নয়, আমি বোঝিয়েছি যারা ইসলামকে রাজনৈতিক দর্শন ভাবেন, রাজনীতি করেন বাংলাদেশ রাস্ট্রের মৌলিক পরিচয় বদলে দিয়ে একে আবার পাকিস্তান স্টাইলের ইসলামিক রাস্ট্র বানানোর জন্য ]